• বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
  • ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বুর্জোয়া রাজনীতির হালচাল
জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বুর্জোয়া রাজনীতির হালচাল

  আন্দোলন প্রতিবেদন  

শনিবার, ৬ আগস্ট ২০২২  |  অনলাইন সংস্করণ

আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে বুর্জোয়া রাজনীতিতে চলছে নতুন তর্ক-বিতর্ক। বিএনপি দলীয়-সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং হাসিনা সরকারের পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে আন্দোলন করছে। নির্বাচন কমিশনের উপরও আস্থা নেই বিএনপি সহ বিরোধী জোটের। নব গঠিত কমিশন বুর্জোয়া দলগুলোকে হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের সাথে সংলাপ/মতবিনিময় করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করেছে। এই সংলাপেও অংশ নেয়নি বিএনপিসহ বিরোধী জোট। বিএনপি’র পাশাপাশি আরও কয়েকটি দল নিরপেক্ষ-সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। ইসির সাথে সংলাপে গিয়েও কোনো কোনো দল এ দাবি জানিয়েছে। কেউ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক, কেউ সর্বদলীয়, কেউ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পরামর্শ দিয়েছে। যেমন গণফ্রন্ট নির্বাচনের সময় একটি রাজনৈতিক সরকার গঠনের দাবি তুলেছে। তাদের প্রস্তাব ‘স্বাধীনতার’ পর থেকে যেসব দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল তাদের সমন্বয়ে একটি সরকার গঠন। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর এই ‘মেসেজগুলো’ ইসি সরকারের কাছে পৌঁছে দেবে। সিইসি আবার এও বলেছেন, ‘সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয় আছে’। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের স্বার্থে যেকোনো সংবেদনশীল উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করার মানসিকতা অবশ্যই যেকোনো দায়িত্বশীল সরকারের থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

নির্বাচন প্রশ্নে প্রতিনিয়ত বাহাস করছে ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুল। এর মধ্য দিয়ে তারা পরস্পরের গণবিরোধী চরিত্র উন্মোচন করছে। হাসিনা সরকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নাখোশ। তারা হাসিনা সরকারকে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন চাপে রেখেছে। তাই বিএনপিসহ বিরোধী জোট আশাবাদী হয়ে উঠেছে হাসিনা সরকার হয়তো নতিস্বীকারে বাধ্য হবে। তার কিছু আলামতও পাওয়া যায় সিইসির সংবিধানের ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ বিষয়ের কথা থেকে।

বিএনপি নির্বাচনে জিতলে আওয়ামী-বিরোধী দলগুলো নিয়ে “জাতীয় সরকার” গঠন করবে বলে বক্তব্য দিয়েছে। এমন প্রলোভনে বামদলগুলোর থেকেও কিছু দল বিএনপির সাথে আন্দোলনে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর হাসিনা সরকার যদি কোনো কারণে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় তা হলে বামনামধারী অন্য দলগুলোরও পোয়াবারো। তারা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার হালুয়া-রুটির ভাগ নেবে।

পরিস্থিতি থেকে দেখা যায় যে, হাসিনা-আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসন জনগণ তো বটেই, সকল ধরনের বিরোধী বুর্জোয়া-সংশোধনবাদী দলগুলোর মাঝেও তীব্র ক্ষোভের ও অনাস্থার সৃষ্টি করেছে। এটা সত্য যে, হাসিনার ফ্যাসিবাদ উচ্ছেদ হলেও যদি শাসক বুর্জোয়া শ্রেণিরই অন্য কোনো গোষ্ঠী, যেমন, বিএনপি বা সামরিক আমলারা ক্ষমতা দখল করে, তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হবেনা এবং জনগণের রাষ্ট্রক্ষমতা ও মুক্তি অর্জিত হবে না। কিন্তু, চলমান ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানে বৃহত্তর ঐক্যের ও কৌশলগত কর্মসূচির গুরুত্ব রয়েছে। যে ঐক্য হতে হবে প্রথমত জনগণের পক্ষের শক্তির ঐক্য। ফ্যাসিবাদ অবসানে জনগণের আন্দোলনকে ভিত্তি করতে হবে। এবং ফ্যাসিবাদ অবসানে একটি গণ-সরকার গঠনের কর্মসূচিকে সামনে  রাখতে হবে। যাতে তা বিপ্লবী কর্মসূচি ও বিপ্লবী সংগ্রামকে সহায়তা করে। বুর্জোয়া কৌশল- ব্যক্তি বা দল বদল, অথবা ব্যবস্থার অধীনে তথাকথিত নিরপেক্ষ সরকার বা নির্বাচনের ফাঁদে পড়লে চলবে না।

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বুর্জোয়া রাজনীতির হালচাল

 আন্দোলন প্রতিবেদন 
শনিবার, ৬ আগস্ট ২০২২  |  অনলাইন সংস্করণ

আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে বুর্জোয়া রাজনীতিতে চলছে নতুন তর্ক-বিতর্ক। বিএনপি দলীয়-সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং হাসিনা সরকারের পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে আন্দোলন করছে। নির্বাচন কমিশনের উপরও আস্থা নেই বিএনপি সহ বিরোধী জোটের। নব গঠিত কমিশন বুর্জোয়া দলগুলোকে হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের সাথে সংলাপ/মতবিনিময় করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করেছে। এই সংলাপেও অংশ নেয়নি বিএনপিসহ বিরোধী জোট। বিএনপি’র পাশাপাশি আরও কয়েকটি দল নিরপেক্ষ-সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। ইসির সাথে সংলাপে গিয়েও কোনো কোনো দল এ দাবি জানিয়েছে। কেউ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক, কেউ সর্বদলীয়, কেউ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পরামর্শ দিয়েছে। যেমন গণফ্রন্ট নির্বাচনের সময় একটি রাজনৈতিক সরকার গঠনের দাবি তুলেছে। তাদের প্রস্তাব ‘স্বাধীনতার’ পর থেকে যেসব দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল তাদের সমন্বয়ে একটি সরকার গঠন। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর এই ‘মেসেজগুলো’ ইসি সরকারের কাছে পৌঁছে দেবে। সিইসি আবার এও বলেছেন, ‘সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয় আছে’। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের স্বার্থে যেকোনো সংবেদনশীল উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করার মানসিকতা অবশ্যই যেকোনো দায়িত্বশীল সরকারের থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

নির্বাচন প্রশ্নে প্রতিনিয়ত বাহাস করছে ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুল। এর মধ্য দিয়ে তারা পরস্পরের গণবিরোধী চরিত্র উন্মোচন করছে। হাসিনা সরকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নাখোশ। তারা হাসিনা সরকারকে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন চাপে রেখেছে। তাই বিএনপিসহ বিরোধী জোট আশাবাদী হয়ে উঠেছে হাসিনা সরকার হয়তো নতিস্বীকারে বাধ্য হবে। তার কিছু আলামতও পাওয়া যায় সিইসির সংবিধানের ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ বিষয়ের কথা থেকে।

বিএনপি নির্বাচনে জিতলে আওয়ামী-বিরোধী দলগুলো নিয়ে “জাতীয় সরকার” গঠন করবে বলে বক্তব্য দিয়েছে। এমন প্রলোভনে বামদলগুলোর থেকেও কিছু দল বিএনপির সাথে আন্দোলনে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর হাসিনা সরকার যদি কোনো কারণে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় তা হলে বামনামধারী অন্য দলগুলোরও পোয়াবারো। তারা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার হালুয়া-রুটির ভাগ নেবে।

পরিস্থিতি থেকে দেখা যায় যে, হাসিনা-আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসন জনগণ তো বটেই, সকল ধরনের বিরোধী বুর্জোয়া-সংশোধনবাদী দলগুলোর মাঝেও তীব্র ক্ষোভের ও অনাস্থার সৃষ্টি করেছে। এটা সত্য যে, হাসিনার ফ্যাসিবাদ উচ্ছেদ হলেও যদি শাসক বুর্জোয়া শ্রেণিরই অন্য কোনো গোষ্ঠী, যেমন, বিএনপি বা সামরিক আমলারা ক্ষমতা দখল করে, তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হবেনা এবং জনগণের রাষ্ট্রক্ষমতা ও মুক্তি অর্জিত হবে না। কিন্তু, চলমান ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানে বৃহত্তর ঐক্যের ও কৌশলগত কর্মসূচির গুরুত্ব রয়েছে। যে ঐক্য হতে হবে প্রথমত জনগণের পক্ষের শক্তির ঐক্য। ফ্যাসিবাদ অবসানে জনগণের আন্দোলনকে ভিত্তি করতে হবে। এবং ফ্যাসিবাদ অবসানে একটি গণ-সরকার গঠনের কর্মসূচিকে সামনে  রাখতে হবে। যাতে তা বিপ্লবী কর্মসূচি ও বিপ্লবী সংগ্রামকে সহায়তা করে। বুর্জোয়া কৌশল- ব্যক্তি বা দল বদল, অথবা ব্যবস্থার অধীনে তথাকথিত নিরপেক্ষ সরকার বা নির্বাচনের ফাঁদে পড়লে চলবে না।

আরও খবর
 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র